ঢাকা,মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

চকরিয়ায় তিন শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই

মিজবাউল হক, চকরিয়া :::s m

চকরিয়া উপজেলার প্রায় চার শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিন’শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন শহীদ মিনার নেই। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারচ্ছে না নতুন প্রজন্ম। পাশাপাশি তারা ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে সঠিক ইতিহাস জানতে পারছে না। সরকারি বরাদ্দ না থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণ করতে পারছে না বলে জানিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার খোরশীদ আলম চৌধুরী।

জানা গেছে, উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১৪১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে কিন্ডারগার্ডেন রয়েছে শতাধিক। বিভিন্নভাবে এবতেদায়ী মাদ্রাসাও রয়েছে অর্ধশতাধিক। এরমধ্যে পৌরসভায় ১৩টি, হারবাং ইউনিয়নে ৬টি, বরইতলীতে ১২টি, কৈয়ারবিলে ১০টি, কাকারায় ৮টি, সুরাজপুর-মানিকপুরে ৮টি, বমুবিলছড়িতে ৩টি, লক্ষ্যারচরে ৩টি, চিরিঙ্গা ইউনিয়নে ৮টি, সাহারবিলে ৫টি, পূর্ববড়ভেওলায় ৫টি, কোনাখালীতে ৭টি, পশ্চিম বড়ভেওলায় ৪টি, ঢেমুশিয়ায় ৬টি, বদরখালীতে ৯টি, ফাশিয়াখালীতে ৮টি, বিএমচরে ৮টি, ডুলাহাজারায় ১১টি ও খুটাখালীতে ৮টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন শহীদ মিনার নেই। এরমধ্যে স্থানীয়ভাবে আর্থিক অনুদানে প্রায় ৩০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকার কথা বললেও সঠিক তথ্য জানাতে পারেনি উপজেলা শিক্ষা অফিসার খোরশীদুল আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য সরকারি কোন বরাদ্দ পাওয়া যায় না। সরকার চাইলে বরাদ্দ দিতে পারেন। কিন্তু অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থানীয় আর্থিক সহায়তায় শহীদ মিনার তৈরী করা হয়েছে। সেগুলো পর্যাপ্ত নয়।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষক জানান, চকরিয়ার বেশির ভাগে বিদ্যালয়ে কোন শহীদ মিনার নেই। সরকারী বরাদ্দের অভাবে শহীন মিনার নির্মাণ করা যাচ্ছে না। নির্মাণের জন্য কোন তাগাদাও নেই। ভাষা দিবস আসলে যেনতেন ভাবে পালন করা হয়।

একইভাবে ৬টি কলেজ, দুটি সরকারি ও অর্ধশতাধিক বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এছাড়াও ৬০টির মতো মাদ্রাসা রয়েছে। বেশির ভাগ কলেজ বা উচ্চ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। ২১শে ফেব্রুয়ারী দিনে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার তৈরী করে শহীদদের প্রতি সম্মান জানানো হয়। অনেক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকলেও সংস্কারের অভাবে সম্মান জানাতেও আসেন না শিক্ষার্থীরা।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আসলাম খান জানান, বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। উপজেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দ বা স্থানীয় আর্থিক সহযোগিতায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে শিক্ষার্থীরা শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে সম্মান জানায়।

সচেতন ব্যক্তিরা জানান, শহীদ মিনার না থাকার কারণে নতুন প্রজম্ম সঠিক ইতিহাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা ভাষা আন্দোলন সম্পূর্কে ধারণাও পাচ্ছে না। যে সব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে সেখানেও অযন্তে অবহেলায় পড়ে রয়েছে। শুধু ভাষা দিবসের দিনে স্মরণ করে আর কোন খবর রাখে না। মহান ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে ও ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ জরুরী। ##

পাঠকের মতামত: